বিশ্ব শ্রবণ দিবস আজ। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়- Hearing care for all. বিভিন্ন কারণে ছোট-বড়-বয়জেষ্ঠ্য প্রত্যেকের মধ্যেই শ্রবণের সমস্যা হতে দেখা যায়। শ্রবণযন্ত্র আমাদের অনেক বড় একটা ইন্দ্রিয়। শ্রবণের সঙ্গে বাকযন্ত্রও সম্পর্কযুক্ত। শুধু তা-ই নয় জীবনের প্রতিটি পর্যায়েই ভালো শ্রবণশক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যায় শ্রবণশক্তি কমে গেলে সামাজিকভাবেও গুরুত্ব কমে যেতে পারে। তাই শ্রবণশক্তি অক্ষুন্ন রাখতে শ্রবণযন্ত্রের যত্নে প্রয়োজন।
শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার প্রাথমিক কারণ
- মাত্রাতিরিক্ত হঠাত জোরে শব্দ যেমন গ্রেনেড বা কাছাকাছি দূরত্বে কোনো বিস্ফোরন
- রাস্তায় যানবাহনের মাত্রাতিরিক্ত হর্ন
- অনেকবেশি এয়ারফোন ব্যবহার
- সর্বদা উচ্চশব্দের মাঝে থাকা
- মাইকে গান-ড্রাম টাইপের ইন্স্ট্রুমেন্টের শব্দ
- মাথার খুলির কোনো আঘাত ও এ্যাক্সিডেন্ট
- শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার কিছু রোগ যেমন- হাম, ম্যানেনজাইটিস, মাম্পস এমন রোগ
- বার্ধক্য
- এমনকি কিছু মেডিসিনের কারণেও শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে।
তাছাড়া আরো অনেক কারণেও শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে। বিভিন্ন উপাদান যেমন তেল, কটনবাড, ম্যাচের কাঠি, চুলের ক্লিপ, মুরগির পাখনা ইত্যাদি দিয়ে কানে খোঁচাখুঁচি করলে কখনো কখনো কানের পর্দা আঘাত প্রাপ্ত হয়ে শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে।
শ্রবণশক্তি কমে যাচ্ছে কীভাবে বোঝা যায়-
- হঠাত মনে হতে পারে স্বাভাবিক কাজকর্ম বাধাগ্রস্থ হচ্ছে
- কানে কোনো অনবরত শব্দ শুনতে পাওয়া
- যে কোনো শব্দ অতিরিক্ত শুনতে পাওয়া।
- কখনো কানব্যথা, মাথাব্যথা, অসাড়তা, দূর্বলতা, শীত শীত অনুভূত হওয়া, ঘাড় শক্ত হয়ে আসা, বমি বমি ভাব, দ্রুত শ্বাস হতে পারে। একসাথে কয়েকটি লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
কানের যত্নে করণীয়
কান একটি অতি প্রয়োজনীয় ইন্দ্রিয়। শ্রবণশক্তি কমে গেলে স্বাভাবিক কাজে মারাত্বক সমস্যা দেখা দেয়। তা-ই এর যত্ন নিতে হবে গুরুত্বের সঙ্গে।
- উচ্চ শব্দযুক্ত স্থান এড়িয়ে চলা অর্থাৎ কোনো কনসার্টে গেলে এয়ারপ্লাগ ব্যবহার করা
- সাঁতার কাটার সময় এয়ারপ্লাগ ব্যবহার করা
- বারে বারে কানে কোনো কিছু প্রবেশ না করানো
- অনেকসময় ধরে এয়ারফোন ব্যবহার না করা
- দৈনন্দিন কাজ উচ্চশব্দযুক্ত স্থানে করতে হলে কিছুদিন পর পর নিরীক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
শ্রবণশক্তির সঙ্গে পুষ্টির সম্পর্ক
শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া জনস্বাস্থ্যের একটি বড় সমস্যা। পুষ্টিগত কারণেও মানুষের মধ্যে শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া রোগকে প্রভাবিত করতে পারে। বেশ কিছু গবেষণায় পুষ্টির সঙ্গে শ্রবণশক্তির সম্পর্ক দেখা হয়েছে। ভিটামিন এ, বি, সি, ডি এবং ই আর খনিজ উপাদানের মধ্যে জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, আয়রন এবং আয়োডিনের মতো মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টের অভাবের সঙ্গে শ্রবণশক্তি হ্রাসের সম্পর্ক রয়েছে। অতিরিক্ত শর্করা-চর্বি ও কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার গ্রহণে যদি প্রোটিনের ঘাটতি থাকে সেক্ষেত্রেও শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়ে থাকে। তবে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড গ্রহণে তা হয় না। অতিপুষ্টিতে অর্থাৎ স্থূলতাতেও দেখা গেছে শ্রবণশক্তি কমে যায়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ যেমন কান পাকা হলেও তাদের দেহে একাধিক ভিটামিন ও খনিজলবণের ঘাটতি হয়ে থাকে। ফলে শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে।
তা-ই সঠিক পুষ্টির ব্যবহার বিশেষ করে সুষম খাদ্য ব্যবস্থায় শ্রবণশক্তিসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সুস্থ ও কর্মঠ হিসেবে নিজেদের তৈরি করা সবচেয়ে সহজ।
লিখেছেন
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
e-mail: info@dietcounselingcentre.com
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.