ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের পরিবর্তন বেশি দেখা যায় ছোট বাচ্চা থেকে কিশোরীতে রূপ নেয়ার সময়। মানসিক, শারীরিক, সামাজিক এই ৩ ধরণের পরিবর্তন কৈশোরেই হয়ে থাকে। মেয়েরা ঋতুবতী হওয়ায় সাবধানতাও বেশি থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি পুষ্টিগত তাৎপর্যও অনেক।
মানসিক পরিবর্তন আনার জন্য অনেকসময় তারা এতো বেশি সচেতন হয়ে যায় যে, অনেকেই নানা মডেলদের অনুসরণ করে থাকে। সে কারনে স্লীম থাকার প্রবণতা কখনো কখনো তাদের মধ্যে অতিমাত্রায় দেখা যায়। কম খাদ্যগ্রহণে অপুষ্টির শিকার হতেও দেখা যায়। অথচ কৈশোরকালে জীবনের সবচেয়ে বেশি পুষ্টির প্রয়োজন হয়। সামান্য অসাবধানতা, কম পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ পরবর্তীতে মারাত্মক স্বাস্থ্যহানী ঘটাতে পারে।
উল্টোটাও হতে দেখা যায়। কৈশোরে হরমোনের পরিবর্তন হয়ে থাকে। এতে অনেকসময় ক্ষুধা লাগা, এটা-সেটা খাওয়ার ইচ্ছা জাগা অসম্ভব কিছু নয়। দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তখন প্রয়োজন শারীরিক কসরত/খেলাধূলা বা প্রয়োজনীয় হাঁটাচলার। যদি ক্যালরি গ্রহণের সঙ্গে দৈহিক ক্রিয়াকলাপ ঠিক না থাকে তখনই কৈশোরকালিন স্থূলতা হতে দেখা যায়। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের মধ্যে কৈশোরকালিন ওবেসিটি বা স্থূলতা বেশি। এ স্থূলতার কারণে কিশোরিদের মধ্যে পিসিওএসের সম্ভবনাও বেড়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয় কখনো কখনো থায়রয়েডের সমস্যা হতেও দেখা যায়। আবার উল্টোটাও হয়। যেমন পিসিওএস অথবা থায়রয়েডের সমস্যার জন্যেও কখনো কখনো ওজন বেড়ে যেতে দেখা যায়।
পুষ্টি ত্রিভূজের মাধ্যমে সব সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব। পুষ্টি ত্রিভুজের মধ্যে রয়েছে খাদ্যের নিশ্চয়তা, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নিজস্ব যত্ন। কিশোরী বয়সে প্রয়োজনীয় যে পুষ্টি উপাদানগুলো বেশি প্রয়োজন সেটা অবশ্যই দিতে হবে। যেমন প্রোটিন, আয়রণ, ক্যালসিয়াম, জিংক বেশি দরকার হয়। উৎস হিসেবে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, বাদাম, শাক-সবজি ও ফল খেলেই হয়। হাড়ের গঠনের জন্য ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ভিটামিন ডি’র প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত ১০মিনিট সরাসরি সূর্যের আলো গায়ে লাগানো উচিত।
রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ৩-৬ মাস অন্তর ক্রিমিনাশক খাওয়া উচিত। পাশাপাশি প্রতিদিন ডিম, ফ্রুট জুস ও পানি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
নিজস্ব যত্ন হিসেবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দেয়া প্রয়োজন। যেমন: নিয়মিত গোসল করা, নখ কাটা ও পরিষ্কার রাখা, ইনার ড্রেস পরিষ্কার রাখা, হাত ধুয়ে যে কোনো খাবার খাওয়া, খাবার ঢেকে রাখা, রাতে ঘুমানোর আগে হাত-মুখ ধোওয়া, দাঁতের প্রতি যত্নশীল হওয়া ইত্যাদি।
কৈশোরের উপযুক্ত পুষ্টি ও যত্ন পরবর্তীতে একজন মেয়ে পরিপূর্ণ, কর্মঠ নারীতে রূপান্তরিত হতে সহজ হয়।
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.