নারী জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটে গর্ভাবস্থায়। একজন নারীর মধ্যে বেড়ে ওঠে একজন পূর্ণ মানব প্রাণ। তখন নারীর শুধু একজনের দিকে খেয়াল রাখলে হয় না। নিজের এবং গর্ভস্থ শিশুর দুই-ই দিকে খেয়াল রাখতে হয়। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর হরমোনাল পরিবর্তনের পাশাপাশি অনেকবেশি শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়।
সম্পূর্ণ গর্ভাবস্থা ৩ মাস করে মোট ৩ ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম ৩ মাসে প্রতিদিনের মর্নিং সিকনেস, মাথা ঘুরানো, এসিডিটি, স্বাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলো তৈরি হয়। বিনা বাক্যে এসব সমস্যা মেনে নেয় একজন নারী। এসময় স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অনেকটা পরিবর্তন আসে। একজন উচ্ছ¡ল, চঞ্চল নারীও যেনো তখন স্বাভাবিকভাবেই তার চরিত্রের উল্টো মেরুতে অবস্থান করে। পরবর্তীতে দেহে নানারকম স্ট্রেচমার্ক, চুল পড়ে যাওয়া, পিগমেন্টেশন বা দেহের স্থানে স্থানে ছোপ ছোপ রঙের পরিবর্তনে যেনো নিজেকেই চেনা দায়। এ সময়ের যেকোনো শারীরিক জটিলতা আরো বেশি সমস্যায় ফেলে দেয় নারীকে। জটিলতা এমনও হতে পারে- মনে হবে কতকাল যেনো আরাম করে শুয়ে ঘুমানো হয়নি। কখনো কখনো কোমর ব্যথা, পা ব্যথাও মারাত্নক আকার ধারণ করতে পারে। এ সবকিছুই নারী মেনে নিয়ে একজন মা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর থাকে।
স্বাভাবিক অবস্থায় যেধরণের পুষ্টিচাহিদা থাকে, গর্ভাবস্থায় তা অনেকখানি বেড়ে যায়। যার দরূন স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৫০-৪৫০ কিলোক্যালরি বেশি গ্রহণ করতে হয়। প্রোটিন স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ২৫ গ্রাম বেশি গ্রহণ করা প্রয়োজন। এর সঙ্গে অতিরিক্ত দরকার হয় ফলিক এসিড, আয়রণ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। একেবারে শেষের ৩ মাসে এগুলোর পাশাপাশি প্রয়োজন হয় ভিটামিন কে’র। পুষ্টি চাহিদা পুরণে সামান্য অসাবধানতায় গর্ভাস্থায় ওবেসিটি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। নারী জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলোতে অবশ্যই চিকিৎসকের পাশাপাশি অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
লিখেছেন
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.