কাঁঠাল শুধু যে পাকার পরেই খাওয়া হয় তা নয়। কাঁঠালের মুচি, কাঁচা কাঁঠাল রান্না করেও খাওয়া হয়। এমনকি পাকা কাঁঠালের বিচিও খাবার হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় কাঁঠালের শিকড়ও ব্যবহার করা হয়। অনেকগুলো কোষ থাকায় ১টা ফল হওয়া সত্ত্বেয় পরিবারের সবাই মিলে কাঁঠাল খাওয়া যায়। কাঁঠালকে বলা হয় গরীবের মাংস। কারণ এর পুষ্টিগুণ অনেক ফলের চেয়ে বেশি। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ উপাদান কাঁঠালে আছে। যেমন থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রনসহ আমিষ, শর্করা এবং বিভিন্ন রকম ভিটামিনের ভান্ডার হচ্ছে এই কাঁঠাল । পাকা কাঁঠালে আমের চেয়ে কম শর্করা থাকে বলে ডায়াবেটিক রোগীরা পরিবেশন হিসেবে ৩ কোষ করে খেতে পারেন। ম্যাঙ্গানিজ থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। তারপরও পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে খাওয়া উচিত। পটাশিয়াম বেশি থাকায় উচ্চরক্তচাপ রোগীরা খেতে পারবেন। গর্ভবতী মায়েরা মৌসুমে প্রতিদিন ২০০ গ্রাম কাঁঠাল খেলে মা ও শিশুর বেশিরভাগ পুষ্টি চাহিদা পুরণ হয়ে যায়। আবার অন্যদিকে স্তন্যদানকালে কাঁঠাল খেলে মায়ের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কাঁঠালের ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস বার্ধক্য প্রতিরোধ করে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন বি৬ কাঁঠালে আছে। যার জন্য হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
গালা ও খাজা - এ দুটি জাত ছাড়াও কাঁঠালের আরো জাত আছে। গালা ও খাজা কাঁঠালের মাঝামাঝি বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হিসেবে রয়েছে 'রসখাজা'। এছাড়া আছে রুদ্রাক্ষি, সিলোন, বারোমাসী, গোলাপগন্ধা, চম্পাগন্ধা, পদ্মরাজ, হাজারী প্রভৃতি। তন্মধ্যে শুধুমাত্র হাজারী কাঁঠাল বাংলাদেশে আছে, বাকীগুলো ভারতে আছে।
দীর্ঘদিন ধরে খাওয়া যায় কচি বা কাঁচা কাঁঠাল আর কাঁঠালের বিচি। কাঁঠাল যখন কাঁচা অবস্থায় থাকে, তখন তাকে এঁচোড় বলে। মাংস দিয়ে এঁচোড় রান্না খুবই মজার। এঁচোড়ের সাথে মুগডাল মিশিয়ে মজাদার দইবড়াও বানানো যায়। আবার ফ্রিজে জমিয়ে রাখলে কয়েকমাস খাওয়া যায়। অন্যদিকে কাঁঠালের মৌসুমে কাঁঠালের বিচি তো খাওয়াই যায়। আবার শুকিয়ে সংরক্ষণ করে আরো কয়েকমাস তরকারীতে দিয়ে, ভর্তা বানিয়ে খাওয়া যায়।
ঔষধি গুণে আয়ুর্বেদে দেখা যায় কাঁঠালের শিকড় অ্যাজমা, জ্বর, চর্মরোগ, ডায়রিয়ায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কাঁঠালে আমিষ থাকায় এটি একটি গুরুপাক ফল। সেজন্য কাঁঠালে কারো বদহজম হলে না খাওয়াই ভালো। যাদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি বা কিডনি রোগী তাদের কাঁঠাল না খাওয়াই ভালো।
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.