পৃথিবী মানুষের বাসযোগ্য গ্রহ। যেখানে প্রতিটি মানুষই মেহমানের মতো। এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে আবার পৃথিবীতেই মৃত্যুকে বরণ করে চলে যেতে হয়। বেঁচে থাকা পর্যন্ত সর্বদা সংগ্রামরত আমরা। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে প্রথমটিই খাদ্য। অথচ এই খাদ্য খেতে গিয়ে আমরা সর্বদা অনিরাপত্তায় ভুগছি।
সুস্থতা সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে বড় নিয়ামত। নিজেকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন নিরাপদ খাদ্যাভ্যাস ও নিরাপদ জীবনযাত্রা। কেনো জানি আমরা সবচেয়ে বেশি অসাবধান এই নিরাপদ খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে।
জনবহুল দেশ বাংলাদেশ। খাদ্য ঘাটতি যেন না হয় সেজন্য স্বল্প জমিটুকুর চাষ পদ্ধতিতে আমরা ব্যবহার করছি অতিরিক্ত সার ও কিটনাশক। সেই সঙ্গে ফলন করছি সবরকম উচ্চফলনশীল ফল-সবজি-ধান এমনকি মাছ-মাংসও। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানগুলো কতটুকুইবা অনিরপদ রাখতে পারছি!! আমাদের খাদ্যাভ্যাসে জায়গা করে নিচ্ছে প্রাকৃতিক খাবারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রসেসড-রিফাইন্ড-রেডিফুড-ফাস্টফুড জাতিয় খাবার। এক মৌসুমের ফল-সবজি উৎপাদন করছি আরেক মৌসুমে। বলা হয় মানুষজন শিক্ষার আলো পেলে সভ্য হয়। কিন্তু প্রকৃতির দূষণ আমরা শিক্ষিত মানুষেরাই সবচেয়ে বেশি করছি। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ-বাস, গাছ কেটে ভবন-রাস্তা-ঘাট নির্মাণ আমরাই করছি। মৌলিক চাহিদাগুলো সুবিধা প্রদানের জন্য আমরাই নদী-খাল ভরাট করে অন্যান্যদের সুযোগ করে দিচ্ছি। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে মারাত্মকভাবে। ফলে সারা পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন রকম মারাত্মক রোগের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা অসুস্থ হচ্ছি।
মনে রাখবেন, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে কয়েকটি বিষয় আমাদের সবার মেনে চলা প্রয়োজন। যেমন:
- যার যতটুকু জমি আছে চেষ্টা করুন পরিবারের খাবারের জন্য হলেও মৌসুমি ফল-সবজি-হাঁস-মুরগি-মাছ-গরু-ছাগলের ছোট ছোট খামার তৈরি করতে। প্রয়োজনে ছাদবাগান-উঠোন বাগান-বারান্দা বাগান করুন।
- যে মৌসুমে যে ফলন হয় চেষ্টা করুন সেগুলোই খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে।
- প্রতিদিন অন্তত ২ বার মৌসুমি দেশি ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। পরিবেশ দুষণে নিজেদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রচুর ফল ও খাওয়ার চেষ্টা করুন। সপ্তাহে অন্তত ১টি দিন পারিবারিকভাবে সবজি দিবস পালন করুন।
- ফাস্টফুড-রেডিফুড-রিফাইন্ডফুড-প্রসেসডফুডগুলো একেবারে কমিয়ে দিন। প্রতিদিন প্রানিজ অথবা উদ্ভিজ্জ আমিষ খাবারে অন্তর্ভূক্ত রাখুন। যেমন যে কোনো মাছ, ডিম, মুরগির মাংস, ডাল, বাদাম, ছোলা, বুট বা ডাবলি, তরল দুধ ইত্যাদি।
- নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের মূল্য সব শ্রেণীর মানুষের আওতার মধ্যে রাখতে বাজার অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
- রান্নার ক্ষেত্রে আধা সিদ্ধ বা পোড়া খাবারগুলো পরিহার করুন। যে খাবার কাঁচা খাওয়া যায় তা কাঁচা অবস্থাতেই খাওয়ার চেষ্টা করুন। আর যেসব সিদ্ধ করতে হয় সেগুলো সম্পূর্ণ ভালোভাবে সিদ্ধ যেন হয় সেদিকে বিশেষ নজর দিন। যেমন মাছ-মাংস। আধা পাকা-আধা কাঁচা সবজি পরিহার করুন। যেমন: সবজে আলু।
- মৌসুম অনুযায়ী পানি পান করুন। যেমন এখন গরমের মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্থাৎ ৮-১০ গ্লাসের অতিরিক্ত আরো ৩-৪ গ্লাস পানি পান করুন।
সুস্থ ও কর্মঠ জাতি গড়তে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত যে বয়সে যেমন খাদ্যাভ্যাস প্রয়োজন অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের কাছ থেকে জেনে নিন।
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.