কম দামে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিউপাদানযুক্ত খাবারের নাম ডিম। আয়তনে ছোটো হলেও ডিমে দু-টি অংশ থাকে। একটি ডিমের সাদা অংশ আরেকটি ডিমের কুসুম বা হলুদ অংশ। দু-টি অংশেই আলাদা আলাদা পুষ্টি উপাদানে ভরপূর। ডিম সালফারবিশিষ্ট এমাইনো এসিডযুক্ত প্রোটিনবহুল খাদ্য। সিদ্ধ, ভাজা, তরকারী, মিষ্টান্ন বিভিন্ন উপায়ে ডিম খাওয়া যায়।
সাধারণত মুরগি এবং হাঁসের ডিমের প্রচলন বেশি। আজকাল কোয়েলের ডিমের প্রচলনও দেখা যাচ্ছে। ছিদ্রযুক্ত খোসা হওয়ায় বিভিন্ন অনুজীব দিয়ে খুব সহজেই ডিম আক্রান্ত হতে পারে। সেই আক্রান্ত ডিম যদি ভালোভাবে সিদ্ধ করে না খাওয়া হয়, তাহলে দেহে নানারকম রোগও হতে পারে। কাঁচা ডিম খেলে কখনো কখনো দেহে এমন একধরণের ক্রিমির জন্ম হতে পারে যা অন্ত্রে বসবাস করে। প্রচণ্ড পেট ব্যথা এর প্রাথমিক উপসর্গ। ক্রিমিনাশক খেলেও এর নিরাময় সম্ভব হয় না। ডিমের সঠিক সংরক্ষণ ও গ্রহনে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ডিমের আকৃতিটা ওভাল শেইপের। একদিক কিছুটা সরু অন্যদিক কিছুটা চওড়া থাকে। বাজার থেকে কিনে আনার পর সঙ্গে সঙ্গে ভালো পানি দিয়ে ঘষে ঘষে ধুয়ে নিতে হবে। চওড়া অংশ নিচের দিকে দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়।
শিশুদের ডিম খাওয়ানো শুরু হয় পরিপূরক খাবার হিসেবে। শিশু জন্মের ৬ মাস পর থেকে ডিম একটি আদর্শ খাদ্য। পরিপূরক খাবার হিসেবে ডিম কীভাবে দেয়া উচিত- এ নিয়ে অনেক মতামত রয়েছে। কারো মতে, ডিমের কুসুম দিয়ে শুরু করা ভালো, আবার কারো মতে, ডিমের সাদা অংশ দিয়ে শুরু করা উচিত। অনেক সময় ডিমের কুসুম বাচ্চাদেরকে কাঁচা অবস্থায় খাওয়াতে দেখা যায়। এতে বাচ্চাদের ছোটো বয়সেই ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। বিপদমুক্ত থাকতে বাচ্চাদের পরিপূরক খাবার হিসেবে পানিপোচ করে ডিমের সাদা অংশ দিয়ে শুরু করা ভালো। এতে ঝুঁকি কম থাকে। ডিমের সাদা অংশে এলবুমিন জাতীয় প্রোটিন এবং অত্যাবশ্যকীয় সালফারযুক্ত লিমিটিং এমাইনো এসিড মিথিওনিন থাকে। সাদা অংশের ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন সুগঠিত ও মজবুত করে। ডিমের হলুদ অংশে ভিটামিন এ, বি২, সায়ানো কোবালামিন, ফলিক এসিডসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান যেমন ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক, কোলাইন, সেলেনিয়াম এবং আয়রন রয়েছে। হলুদ অংশে ফসফোলিপিড রয়েছে যা ভালো কোলেস্টেরল সরবরাহ করে। ডিমকে সুপার ফুড বলা হয়।
ডিমে এলার্জি না থাকলে ছোটো থেকে বৃদ্ধ বয়সে প্রত্যেকে ১টি করে ডিম অনায়াসে খেতে পারবেন। ডিমে এতেবেশি পুষ্টি উপাদান থাকা সত্ত্বেয় বাজারে আরো কিছু পুষ্টিউপাদানযুক্ত অবস্থায়েও পাওয়া যায়। যেগুলো অনেকসময় বাচ্চাদেরও খাওয়াতে দেখা যায়। মূলত যেসব পুষ্টি উপাদান ডিমে রয়েছে, এরচেয়ে বেশি উপাদান আমাদের দেহের জন্য প্রয়োজনই নেই। সুস্থ থাকতে এবং অন্যকে সুস্থ রাখতে সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতিতে স্বাভাবিক ডিম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
কপিরাইট
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.