মাতৃত্ব, নারী জীবনকে পরিপূর্ণ করে। একজন সুস্থ মা জন্ম দিতে পারে একটি সুস্থ শিশুর। সঠিক সময়ে বা সঠিক অবস্থায় গর্ভবতী হলে ভালো। বুঝে ওঠার আগেই আমাদের দেশে অনেককে গর্ভবতী হতে দেখা যায়। আবার অনেকে গর্ভধারণের উপযুক্ত অবস্থা বা সময় বুঝে গর্ভবতী হওয়ার কথা ভাবেন। সুস্থ শিশুর জন্মের জন্য একজন নারীর কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। অর্থাৎ যিনি মা হবেন তিনি গর্ভধারণের উপযুক্ত কিনা!
গর্ভবতী হওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি
একজন নারী মা হতে কিছু পূর্ব প্রস্তুতি প্রয়োজন। আদর্শ ওজন গর্ভধারণের জন্য স্বাস্থ্যকর হলে ভালো। গর্ভধারণের আগে একজন নারীর ওজন যদি বয়স ও উচ্চতার তুলনায় কম বা বেশি থাকে, তাহলে গর্ভধারণের আগেই আদর্শ ওজনে আসতে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেয়া উচিত। কারণ ওজন কমাতে হবে সুষম খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে। যেনো পরবর্তীতে দেহে কোনো পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি না থাকে।
স্বাস্থ্যকর ওজন নিয়ে ভাবনার কারণ
ওজন বেশি থাকলে সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে। তা-ছাড়া রয়েছে গর্ভাবস্থার ওজন বৃদ্ধি। প্রতি সপ্তাহে ৪৫০-৫০০ গ্রাম করে ওজন স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। গর্ভাবস্থায় অতিরক্ত ওজন বৃদ্ধি পরবর্তীতে ওজন কমানো একজন নারীর জন্য খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক আছে কিনা দেখে নিলে গর্ভাবস্থায় ওজন কতখানি বাড়াতে হবে সেটা খুব সহজেই বোঝা যায়। এক্ষেত্রে বিএমআই দেখতে হয়। সে অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস পরবর্তীতে সুস্থ শিশু প্রসবে সুবিধা দিবে। ওজন কম হলেও বিভিন্ন ধরণের সমস্যা থাকতে পারে। যেমন, এনিমিয়া, লো-প্রেসার, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, দূর্বলতা, প্রসবকালীন জটিলতা ইত্যাদি। সুস্থ শিশু জন্ম দিতে একজন মায়ের আদর্শ ওজনে থাকা জরুরি।
বয়স
নারী তার জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বা বিভিন্ন বয়সে গর্ভবতী হয়ে থাকে। গর্ভধারণের জন্য বিশেষ করে শিশু জন্ম দেয়ার জন্য আদর্শ বয়স জরুরি। গর্ভধারণের একেকটি বয়সের সুবিধা-অসুবিধা একেকরকম। তাছাড়া আর্থ-সামাজিক অবস্থা, জীবনের ক্যারিয়ারের সম্ভাবনাগুলির কথা বিবেচনা করেও সন্তান ধারণ করা প্রয়োজন।
মানসিক প্রস্তুতি
নারীর জীবনে সন্তান ধারণ একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি একটি সুন্দর ও দীর্ঘ ভ্রমণ। নারীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা খুব দরকার। গর্ভধারণের প্রথম পর্যায়ে কিছু সমস্যা গর্ভধারিনীর হতে পারে। যেমন, বমি বমি ভাব, স্বাদ নষ্ট হওয়া, নিজের দেহের আমুল পরিবর্তন ইত্যাদি। এটা স্বাভাবিক। আগে থেকে মানসিক প্রস্তুতি হিসেবে ভাবতে হবে, গর্ভধারণ যিনি করছেন তাকে জন্ম দিতে গিয়েও নিজের মায়েরও এ ধরণের সমস্যা হয়েছিলো। ভাবতে হবে, যে গর্ভে আসছে, সে তারই সম্পদ।
প্যাথোলজিক্যাল কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা
চিকিৎসা শাস্ত্রে বলা হয় গর্ভধারণের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা রয়েছে যেগুলো গর্ভধারণের পূর্বেই করা প্রয়োজন। এ ধরণের প্রস্তুতি হবু মায়ের জন্য গর্ভাবস্থাকে আরো সহজ ও নিরাপদ করতে পারে। যে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত গর্ভাবস্থার সময় বা পরে জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভবতী হওয়ার আগে প্যাথলজীক্যাল কয়েক ধরণের পরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে। যেমন-
ভিটামিন ডি’র পরিমাণ, গ্লুকোজের পরিমাণ, সিবিসি, জেনিটিক স্ক্রিনিং ইত্যাদি।
ছবিতে দেয়া বইটিতে নারী জীবনের সূচনা লগ্ন থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কী খাবার ও পুষ্টি প্রয়োজন, কীভাবে যত্ন নিতে হয়, বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমাস্যা ও সমাধান সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। আগ্রহীরা সংগ্রহে রাখতে পারেন।
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.