বছরের একটি বিশেষ সময়ে হজ্জ অনুষ্ঠিত হয়। যারা হজ্জে যাচ্ছেন, তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে থাকে। যেখানে নিজের বাড়ি-ঘর বা কর্মস্থলের মতো সুবিধাগুলো পাওয়া যায় না। বিভিন্ন স্বাস্থ্যসমস্যায় এরসঙ্গে থাকতে পারে। হজ্জ সাধারণত ১৫-৪০ দিনের একটি বিশেষ সময় নির্ধারিত থাকে। এর মাঝেই করতে হয় বেশ কিছু কার্যক্রম। খাবারের ব্যবস্থা বলতে গেলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে খুব একটি থাকে না। শুধু তা-ই নয়, যে ধরণের খাবারের ব্যবস্থা, বেশিরভাগ সেটাই খেতে হয়। হজ্জ সম্পন্ন করতে পরিশ্রমও হয় প্রচুর। সেজন্য শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে নিজেদের সুস্থ রাখা খুব জরুরি।
ওজন বেশি থাকলে-
নির্ধারিত খাবার খেতে হলে সারাদিনে কমপক্ষে প্রতিদিন ৩ বার বিশেষ করে ফজর-আসর-রাতের খাওয়ার পর তওয়াফ করার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি উপরে উল্লিখিত নিজের কাছে রাখা খাবারগুলো বিশেষ করে বাদাম, খেজুর, গাজর, আপেল খাওয়ার চেষ্টা করুন। হজ্জ পালনে পরিশ্রম বেশি। সুস্থ দেহ খুব জরুরি।
এসিডিটি সমস্যায়-
অনেকের আগে থেকে এসিডিটির সমস্যা থাকতে পারে। নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত খাবার খাওয়া এসিডিটি বাড়াতে পারে। এসিডিটির মেডিসিন সবসময় খাওয়া ঠিক নয়। নিজের কাছে রাখা খাবারগুলো অন্তত ২ ঘন্টা অন্তর অল্প অল্প করে খেয়ে নেয়া ভালো। যে খাবারই খাওয়া হোক না কেনো ভালো করে চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত পেট ভরে খাওয়ার প্রয়োজন নেই। জমজমের পানি সর্বোত্র বিদ্যমান। খাওয়ার পর পর পানি না খেয়ে কিছুক্ষণ পর অর্থাৎ অন্তত আধা ঘন্টা পর পানি পানের চেষ্টা করুন।
উচ্চকোলেস্টেরল ও উচ্চরক্তচাপ থাকলে যা করণীয়
অনিয়ন্ত্রিত উচ্চরক্তচাপ থাকলে মাথায় যেনো বেশি রোদ না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন। তাওয়াফের সময় অথবা আরাফাতের ময়দানে গাছের ছায়ার নীচ দিয়ে চলার চেষ্টা করুন অথবা ছাতা ব্যবহার করুন। নিজের কাছে থাকা ছোটো ব্যাগে রাখুন কম সোডিয়ামযুক্ত ফল-সবজি যেমন খেজুর, ছোটো আপেল, কলা, কমলা, গাজর, বাদাম ইত্যাদি। পাশাপাশি প্রেশার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ, ছোটো বোতলে জমজমের পানিও রাখুন। ওখানকার খাবার ব্যবস্থায় মাংস বেশি থাকলেও কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। সবজি ও সালাদ বেশি রাখুন। ব্যবস্থা না থাকলে নিজে গাজর-শসা-লেবু নিজের জন্য কিনে রাখুন।
ডায়াবেটিসে-
মূল খাবার হিসেবে চিড়া, খই, ওটস নিজেদের কাছে রাখা প্রয়োজন। ফাইবারযুক্ত লো-গ্লাইসেমিক খাবার ডায়াবেটিক রোগীদের খাওয়া প্রয়োজন। ফাইবার প্রত্যেকের জন্যই খুব উপকারী। ফাইবার পরিশ্রমের পাশাপাশি দীর্ঘ সময় ধরে দেহে শক্তি জোগানে সাহায্য করতে পারে। যেহেতু প্রচুর হাঁটাচলা করতে হয়, তা-ই ডায়াবেটিক রোগী হজ্জে খেজুর বা খুরমা খেতে পারবেন। অতিরিক্ত ক্ষুধাতে ডায়াবেটিক পেশেন্টদের শরীর কাঁপতে পারে। ৩ ঘন্টা অন্তর সেজন্য খাবার খাওয়া জরুরি। বিশেষ করে ৩ বার ভারী খাবার এবং ৩ বার হালকা খাবার গ্রহণ করলে ডায়াবেটিক রোগীদের হজ্জ পালনে কোনো সমস্যা হবে না। ডায়াবেটিক পেশেন্টদের বারে বারে প্রস্রাব লাগে। অনেকে এ কারণে জমজমের পানি বেশি পান করা থেকে বিরত থাকেন। কারো এ ধরণের সমস্যা থাকলে গন্তব্য স্থানে পৌঁছানোর পর থেকে পানি পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।
পরিবেশ আর খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের জন্য হজ্জে অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য, লুজমোশন, মাথা ব্যথা হতে দেখা যায়। ওখানকার খাদ্যাভ্যাসের সাথে নিজের নেয়া খাদ্যদ্রব্যের সামঞ্জস্য বিধান করলেই কোনো সমস্যা হয় না।
সুস্থ অবস্থায় হজ্জ পালন করুন।
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.