প্রচলিত একটি উক্তি,“আমি ডায়েটে আছি”। আসলে এটা কোনো কথা নয়। ডায়েট মানে নিজের খাদ্যাভ্যাস থেকে সরে অন্য একটি খাদ্যাভ্যাসে আপনাকে যেতে হবে এমনটি নয়। শরীরের অবস্থা বুঝে খাদ্যাভ্যাসে কিছু বৈজ্ঞানিক পরিবর্তন করে নিতে হয়। তার পাশাপাশি জীবনযাত্রারও কিছু পরিবর্তন দরকার হতে পারে। এখানে প্রয়োজন হয় না কোনো সাপ্লিমেন্ট বা অস্বাভাবিক কোনো খাদ্যাভ্যাসের। শুধু ওজন কমানোই ডায়েটিং নয়। একজন মানুষের ওজন বাড়ানো প্রয়োজন হতে পারে, হতে পারে কারো কোলেস্টেরল কমানো প্রয়োজন। এমনও হতে পারে হঠাৎ হয়তো দেখা যাচ্ছে কারো রক্তে ইউরিক এসিড বেড়ে গেছে। শরীরে শক্তি পাচ্ছেন না, অসম্ভব দূর্বলতা আপনাকে গ্রাস করছে এগুলোও হতে পারে। সুস্থতা সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আমাদের দেহের প্রতিটি অর্গানের সুস্থতা বজায় রাখতে আমাদের অর্গানগুলোর যত্ন নেয়া জরুরি। আমাদের কাছে ইদানিং এমন কিছু সমস্যা নিয়ে আসছেন, যারা নিজেদের সমস্যা না ভেবেই ডায়েটিং করেছেন। সবসময়ই মনে রাখবেন নিজেকে কখনো গিনিপিগ বানাবেন না। যা আপনার জন্য পরবর্তীতে ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন কিছু কখনোই করা উচিত নয়। না জেনে, না বুঝে, অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া যখন কিছু করতে যাবেন, তার ফল তো ভুগতেই হতে পারে। আমরা দেখছি, যেসব ডায়েটিং ওজন কমাতে করেছেন, তা সম্পূর্ণই নিজের খাদ্যাভ্যাসের বহির্ভূত। যা কোনোভাবেই অভ্যাস্থ হওয়ার মতো কোনো কারণ নেই। যার জন্য স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসার সাথে সাথেই ওজন যেভাবে কমেছিলো তার দ্বিগুণ হারে ওজন বেড়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, সে-ই অস্বাভাবিক ডায়েটিংয়ে ইনডাইজেশন, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, গ্লুকোজের অনিয়ন্ত্রিত অবস্থা, অতিমাত্রায় কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি, রক্তস্বল্পতা, ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়া, হরমোনাল ডিসটার্বেন্স দেখা দিচ্ছে। এমনও হতে দেখা গেছে হঠাৎ কোনো অসুখ হলে মেডিসিন যেখানে প্রয়োজন, সেখানে মেডিসিনও ঠিকমতো কাজ করে না।
অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া কখনোই কোনো ডায়েটিং করা উচিত নয়। সবসময় সুষম খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার বৈজ্ঞানিক পরিবর্তনেই আপনি আপনার কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।
আশ্চর্য হলেও সত্য যে অনেকে ওজন কমানোর ডায়েটিংয়ের সময় অনেকটা অসামাজিকও হয়ে যায়। যেমন দাওয়াতে না যাওয়া অথবা গেলেও কিছু না খাওয়া ইত্যাদি। এগুলো কোনো ডায়েটিংই নয়। মানুষ সামাজিক জীব। সঠিক উপায়ে সবই করতে পারবেন। অনেকে রাতে দাওয়াত থাকলে, সারাদিন না খেয়ে থাকেন রাতে খেতে হবে তাই। এগুলোরও কোনো প্রয়োজন নেই।
- দাওয়াতে যাওয়ার আগে ১ বাটি সালাদ অথবা ১টি মৌসুমী ফল খেয়ে বের হবেন। অর্থাৎ খালি পেটে দাওয়াতে যাবেন না।
- যেসব খাবার অন্তর্ভূক্ত থাকবে সেগুলো থেকে কার্বহাইড্রেট বর্জন করে বাকি সবকিছুই খেতে পারেন। যেমন: রোস্ট, কাবাব, ভেজিটেবল, সালাদ, ডেজার্ট ইত্যাদি। বোরহানি থাকলে সেটিও নিতে পারেন। কোল্ডড্রিংক্স থাকলে কালারলেস অল্প পরিমাণে নিতে পারেন।
ঘরে ফিরে লাইফস্টাইল মডিফিকেশন হিসেবে লেবু পানি পানের পাশাপাশি সামান্য সময় হলেও ফ্রি-হ্যান্ড কিছু ব্যায়াম করে নিন। নিজেকে প্রাণবন্তু রাখুন। সঠিক নিয়মে অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শে সুস্থ থেকে ডায়েটিং করুন।
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.