দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মধ্যে হার্ট বা হৃদপিণ্ড অন্যতম। কথায় কথায় আমরা বলে থাকি, Prevention is better than cure- কিন্তু মানতে চাই না। প্রতিদিনকার খাদ্যাভ্যাস-জীবনযাপন পদ্ধতিতে নিজেদের প্রয়োজনীয়তাগুলোকে প্রাধান্য দিতে দিতে, কখনযে দেহের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ অংঙ্গগুলোর ক্ষতিসাধন হয়ে যায়, বুঝতেই পারি না। যখন বুঝি তখন হাসপাতাল, ডাক্তার, দেশে না হলে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতেও কার্পন্য করি না। অথচ আমরা সবাই জানি, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। রোগ সারানোর চেষ্টায় যতটুকু আর্থিক যোগান দিতে হয়, তার তুলনায় একটু সাবধানতা, একটু নিয়ম মেনে চলার জন্য আর্থিক যোগান কিছুই নয়। আমরা অনেক সময় ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে গিয়ে বর্তমানে উদাশীন থাকি। অথচ বর্তমানে ঠিক অবস্থানে থাকলে ভবিষ্যত আপনিতেই ভালো থাকবে। যেহেতু আমরা ভবিষ্যত জানি না, অতদূর যেতে পারবো কিনা তা-ও জানি না- তাই আসুন বর্তমান অবস্থানে থেকে আমাদের হার্ট ভালো রাখার চেষ্টা করি।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে দম চর্চা করুন। সকালে এবং বিকালে। একেকবার কমপক্ষে ২০ বার করে করুন। নাক দিয়ে লম্বা দম নিয়ে মুখ দিয়ে লম্বা করে ছেড়ে দিন।
- খালি পেটে পানি পান হার্টকে সুস্থ রাখে। তাই খালি পেটে অন্তত ২ গ্লাস পানি পানের অভ্যাস করুন। সারাদিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পানের চেষ্টা করুন।
- দেহের প্রতিটি অঙ্গ সুস্থ রাখতে দেহ সচল রাখা প্রয়োজন। সেজন্য অন্তত ২০ মিনিট ফ্রী-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন। সকালের এই ২০ মিনিটের এক্সারসাইজ আপনাকে প্রায় ১৬ ঘন্টা কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করবে।
- সকালের খাবারের প্রতি মনোযোগী হোন। অধিক আঁশযুক্ত ও প্রোটিনযুক্ত খাবার প্রতিদিনের সকালে অন্তর্ভূক্ত করুন। এরই সঙ্গে না খেয়ে বাড়ীর বাইরে যেনো না যেতে হয় সে বিষয়ে নজর দিন।
- প্রতিদিনের খাবারে ভিন্নতা রাখা প্রয়োজন। অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন রঙ্গীন শাক-সবজি, ফল অন্তর্ভূক্ত করুন।
- প্রোটিন গ্রহনে উদ্ভীজ এবং প্রানীজ মিলিয়ে গ্রহণ করুন। বয়সভেদে পরিবেশন ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু আইটেমগুলো রাখার চেষ্টা করুন। সপ্তাহে অন্তত ২ বার সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- স্ন্যাক্স হিসেবে বিভিন্ন জাতের বাদাম ও ফল প্রাধান্য দিন। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, প্রসেসড খাবার, রেডিফুড সীমিত রাখুন। পাশাপাশি লিকুইড ক্যালরি অর্থাৎ কোমল পানিয় প্রতিদিনের খাবার থেকে বর্জন করুন।
- হার্টের সুস্থতায় মানসিক স্বাস্থ্যের উপর জোর দিন। তাই নিজে মানসিক আনন্দ পান এমন ধরণের কাজগুলো প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় অন্তর্ভূক্ত করুন। পরিবারের সদস্যদের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখুন। ছোট-বড় সবার সাথেই আনন্দে থাকার চেষ্টা করুন।
- কিছু ছোট ছোট রোগ হার্টকে দূর্বল করে দেয়। যেমন: ফ্লু, নিউমোনিয়া অথবা বিভিন্ন ইনফেকশন। তা-ই প্রতিদিন বারে বারে হাত ধোয়া, কুলি করা, নাক পরিষ্কার রাখুন।
- রাতের ঘুম সুস্থতার জন্য জরুরি। অতিরিক্ত রাত না জেগে ভালো ঘুম দেয়ার চেষ্টা করুন।
অনেক সময় অতিরিক্ত রাগ, টেনশন, মানসিক চাপ, শত্রু ভাবাপন্ন মনোভাব হার্টকে দূর্বল করে ফেলে। অতএব হার্ট সুস্থ রাখার চেষ্টা অসুস্থ হওয়ার আগেই করা প্রয়োজন। হার্ট সুস্থ রাখতে অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.