কথায় আছে, যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ। প্রতিনিয়ত আমাদের দেহ শ্বাস নিচ্ছে এবং প্রশ্বাসের মাধ্যমে শ্বাস বের করে দিচ্ছে। এই শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজটি আমাদের বুকে দুটি স্পঞ্জী অঙ্গ ফুসফুস দ্বারা সংগঠিত হয়। এই অঙ্গ শ্বাস নেওয়ার সময় বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহের দুষিত পদার্থ হিসেবে কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে দেয়। দেহের ভেতরে ফুসফুসের এতো বড় কার্যক্রম আমরা বাহির থেকে দেখতে পাই না। সেজন্য আমরাও বুঝতে পারিনা কীভাবে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হয় বা হচ্ছে।
ক্যান্সার শুনলে প্রত্যেকেই ভীত হয়ে যায়। কিছু কিছু ফুডহ্যাবিট বা লাইফস্টাইল শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে যেমন পারে, আবার নিয়ম মেনে চললে মুক্তিও পাওয়া সম্ভব হতে পারে। কিন্তু ফুসফুসের ক্যান্সার এমন এক ধরনের ক্যান্সার যা ফুসফুসেই শুরু হয়। ফুসফুসের ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। যারা ধূমপান করেন তাদের ফুসফুসের ক্যান্সারের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি থাকে- এটা যেমন সত্য। আবার যারা ধূমপান করছেন না তাদেরও ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে। অর্থাৎ যদি কেউ সরাসরি ধূমপান করেন না, কিন্তু ধূমপায়ীর সংস্পর্শে বা কাছাকাছি থাকছেন বা আছেন তাদেরও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বেশি। যেমন একটি কথা আছে যে আপনি যদি ধূমপান ছেড়ে দেন, এমনকি অনেক বছর ধরে ধূমপান করার পরেও, আপনি ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারেন। কিন্ত পরোক্ষ ধূমপায়ী যারা তাদের কোন নিরাপদ স্তর নেই। এমনকি পরোক্ষ ধূমপানে তাৎক্ষনিক ক্ষতির কারণও হতে পারে। যেমন:
- করোনারি হার্ট ডিজিজ, স্ট্রোক, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগ হতে পারে। এর ফলে অকাল মৃত্যুও হতে পারে।
- মহিলাদের মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রতিকূল প্রভাব সৃষ্টি হতে পারে। পরোক্ষ ধূমপানে শিশুদের হঠাৎ মৃত্যু সিন্ড্রোম (SIDS), হতে পারে। তাছাড়া শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, কানের সংক্রমণ , বাচ্চাদের হাঁপানিও হতে পারে।
- গবেষণায় দেখা গেছে, পরোক্ষ ধূমপানের অর্থাৎ ধোঁয়া গ্রহণের ৬০ মিনিটের মধ্যে ক্ষতিকারক প্রদাহজনক ও শ্বাসযন্ত্রের প্রভাব তৈরি করতে পারে যা কমপক্ষে ৩ ঘন্টা স্থায়ী হতে পারে।
- প্রাপ্তবয়স্ক যারা ধূমপান করেন না এবং পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসেন তাদের ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি 20-30%. যা পরবর্তীতে ফুসফুসের ক্যান্সারে মৃত্যু হয়ে থাকে।
- শুধু তাই নয়, পরোক্ষ ধূমপানে দেহে অন্যান্য অঙ্গেও ক্যান্সার সেল তৈরিকে গতিশীল করতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, অন্যান্য ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্য ও পুষ্টি থাকলেও ফুসফুসের ক্যান্সারের কোনো আলাদা সেরা ডায়েট নেই। অতএব নিজেও ধূমপান থেকে দূরে থাকুন এবং অন্যকেও দূরে থাকতে সাহায্য করুন।
লেখক- সৈয়দা শারমিন আক্তার
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.