লোকে বলে, বয়স একটা সংখ্যা। কিন্তু যে কোনো হাসপাতাল বা চিকিৎসক কোনো ষাটোর্ধ ব্যক্তির চিকিৎসা দিতে গেলে বলে বয়স হয়েছে তো!!! কোনটা ঠিক???
সৃষ্টিকর্তা আমাদের এই ছোট্ট দেহে একেকটা ফ্যাক্টরিতুল্য অংঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়েছেন। যা শিশু জন্মের পর থেকে কান্নার মাধ্যমে একান্ত নিজস্ব হিসেবে সচল হয়ে যায়। একনাগাড়ে প্রতিটি অংঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বেঁচে থাকা অবদি চলতেই থাকে। কিছু কিছু অর্গানের তো কোনো বিশ্রামই নেই। আবার কিছু অঙ্গের বিশ্রাম থাকলেও সচল রাখতে যত্নের প্রয়োজন হয়।
মাধ্যাকর্ষণশক্তির সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে মানবদেহকে দাঁড় করিয়ে রাখে মেরুদণ্ড। ঘাড় থেকে মেরুদণ্ডের হাড়ের অংশ শুরু হয়। এই এরিয়াকে সার্ভিকাল বলা হয়। আমাদের ঘাড় থেকে মেরুদণ্ডে ৭টি কশেরুকা (C1 থেকে C7), ৬টি ইন্টারভার্টেব্রাল ডিস্ক এবং ৮টি স্নায়ুমূল রয়েছে। ঘাড়ের স্নায়ুমূলের সাহায্যে ব্রেণ থেকে সংকেত পৌঁছানোর মাধ্যমে বিশেষ করে আমাদের কাঁধ, বাহু এবং হাতের কাজ নিয়ন্ত্রিত হয়। ঘাড়ের হাড়ের সমস্যা থেকে যা হয়ে থাকে, তাকে স্পণ্ডেলাইটিস বলা হয়। ঘাড়ের নীচের দিকে মেরুদণ্ডের অন্যান্য অংশেও সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা পরবর্তীতে সার্ভিকাল মাইলোপ্যাথিতে রূপ নিতে পারে।
সার্ভিকাল মায়লোপ্যাথির একটি সাধারণ ধরন হল সার্ভিকাল স্পন্ডাইলোটিক মায়লোপ্যাথি। "স্পন্ডাইলোটিক" শব্দটি মায়লোপ্যাথির সম্ভাব্য কারণগুলির একটিকে বোঝায়। মেরুদণ্ডের ধীরে ধীরে অবক্ষয় যা বয়সের সাথে সাথে ঘটতে পারে। বিশেষ করে সার্ভিকাল স্পন্ডাইলোটিক মাইলোপ্যাথি পঞ্চাশোর্ধ বয়সের লোকেদের মধ্যে বেশি দেখা দিতে পারে। যা প্রাকৃতিকভাবেই মেরুদণ্ডের সংকীর্ণতায় হয়ে থাকে। আবার অনেকে জন্মগত মেরুদণ্ডের স্টেনোসিস নিয়ে জন্মগ্রহন করে থাকে। তাদের সরু বা সংকীর্ণ হওয়ার প্রবণতায় আরো দ্রুত মেইলোপ্যাথি অনুভব করতে পারে। কখনো কখনো মাইলোপ্যাথি মেরুদণ্ডের আশেপাশের লিগামেন্টগুলোর শক্তভাব হলেও হতে পারে।
ঘাড়ে সমস্যার লক্ষণগুলোর মধ্যে দেখা যায়- ঘাড় ব্যথা, মাসলগুলো শক্ত হওয়া, ঘাড় নাড়াতে সমস্যা, যা সময়মতো চিকিৎসা না হলে আস্তে আস্তে নিচের দিকে অগ্রসর হতে পারে। এতে যে সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে, তা হলো- বাহু ও হাতে দুর্বলতা, বাহু ও হাতে অসাড়তা, কলম বা কয়েনের মতো ছোট কিছু ধরতে সমস্যা, নিজের ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। মাইলোপ্যাথিতে রূপ নিলে- হাঁটতে অসুবিধা, দেহের নীচের অংশে দূর্বলতা, হাত বা পায়ের ব্যালেন্স কমে যাওয়া, পায়ের পেশীর কার্যকারিতা কমে যায়।
সার্ভিকাল মাইলোপ্যাথি সমস্যায় চিকিৎসা নেই, তা নয়। শুধু তা-ই নয় এ ধরণের চিকিৎসায় বয়স কোন বাঁধাও নয়। আমাদের নানা-নানী, দাদা-দাদীরাই তো অনেকবেশি বয়সেও সুস্থ ও কর্মঠ জীবন অতিবাহিত করেছেন। আমরা সবাই বলি চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে। কারণ রোগ নির্ণয়ের এখন অনেক কিছু আবিষ্কার হয়েছে। অর্থাৎ সণাক্তকরণ দ্রুত করা সম্ভব। যে সমস্যা দ্রুত সণাক্ত হয়, তার চিকিৎসাও দ্রুত শুরু করা যায়- এটাই তো স্বাভাবিক। এখানে বয়স কেন আসবে??? ৬০-৭০ বছরের বেশি মানুষের এ ধরণের সমস্যায় বয়স হয়েছে বলে কি চিকিৎসা করা যাবে না??? নাকি চিকিৎসা নেই!!!
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ
ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
If you have any queries please contact us
Please fill out the below details if you wish to receive a confidential call from our client relations team.