অটিজম মস্তিস্কের বিকাশজনিত সমস্যা, যার কারণ আজও অজানা। এ সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে সামাজিক আচার আচরণ, যোগাযোগ ও ব্যবহারের সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। ধরা হয় মায়ের গর্ভেই শিশুরা এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়। তবে প্রকাশ ঘটে জন্মের প্রথম তিন বছরের মধ্যে। সেক্ষেত্রে Early Intervention এর মাধ্যমে জন্মের ১৮ মাস থেকে ৩৬ মাস বয়সের মধ্যে আটিজম শনাক্তকরণ ও যথোপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা, পুষ্টি ব্যবস্থাপনা, প্রশিক্ষিত অটিজম থেরাপিস্টের মাধ্যমে থেরাপি প্রদানের ফলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরানো যেতে পারে।
প্রোবায়োটিক্স
খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (FAO/WHO) দেওয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী – প্রোবায়োটিক্স হচ্ছে জীবন্ত অনুজীবসমূহ যা পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে মানবদেহের স্বাস্থ্য রক্ষায় উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্য ভাবে বলা যায় যে, প্রোবায়োটিক্স হচ্ছে নন-প্যাথোজেনিক অণুজীবসমূহ যেগুলো মানবদেহের পাকস্থলী এবং অন্ত্রে অবস্থান করে মানবদেহের জন্য উপকারী কাজ করে থাকে। এদের মধ্যে ইস্ট অথবা ব্যাকটেরিয়া, বিশেষ করে ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটেরিয়া উল্লেখযোগ্য। এগুলো খাদ্যে এবং মানবদেহের অন্ত্রে পাওয়া যায় এবং খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করার পর মানবদেহের স্বাস্থ্য রক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি
গর্ভকালীন মা ও শিশু উভয়ের জন্যই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটা অধ্যায়। আর এই গর্ভস্থ ভ্রুণের বেড়ে উঠার জন্য সকল পুষ্টির চাহিদা পূরন করে মা। গর্ভবতী মায়ের অতিরিক্ত খাবারের প্রয়োজন দু’টি কারণে – প্রথমত: নিজের স্বাস্থ্য সঠিক রাখা, দ্বিতীয়ত: গর্ভস্থ ভ্রুণের গঠন ও বৃদ্ধি ঠিক রাখা। গর্ভকালীন শেষ তিন মাসে মায়ের সুষম খাদ্যের পরিমাণ সঠিক না হলে শিশু কম ওজনের বা অপরিণত শিশুর জন্ম হয়। এমন কি শিশুর মৃত্যুও হতে পারে। পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের অভাবে গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতাসহ বিভিন্ন রকম রোগ ও অপুষ্টি দেখা দেয়, এবং গর্ভস্থ ভ্রুণের গঠন ও বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
সুস্থ থাকুক কিডনি
কিডনি রোগ কোন নতুন সমস্যা নয়। তবুও বিশ্বব্যাপী এ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। আমাদের দেশে বর্তমানে অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতন। তবে বেশির ভাগ লোকই বিভিন্ন রোগের উপসর্গ যেমন খাবারে অনিহা, বমি বমি ভাব, ঝিমুনি, প্রসাব জটিলতা, ইডিমা ইত্যাদিকে মানসিক চাপ বা দুর্বলতা মনে করে গুরুত্ব দেন না। বয়স বাড়ারসাথে সাথে আমাদের শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে।
কম ওজন নিয়ে চিন্তিত!
স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জন করা যে কোনো ক্ষীণকায় ব্যক্তির একটি অন্যতম টার্গেট। এছাড়া যারা পেশীবহুল খেলাধূলা করেন ও দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তারাও চান স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জন করতে। ক্ষীণকায় বলতে আমরা তাকেই বুঝি যার ওজন “স্বাস্থ্যকর ওজন সীমার” মাঝে নাই এবং দেহে কাক্সিক্ষত চর্বির পরিমাণ নেই যাতে তিনি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে পারেন।
শিশুর স্থুলতা
আমাদের দেশে অনেক মা বাবাই শিশুর জীবনের প্রথম দিকে ওজন বৃদ্ধিকে আনন্দের সাথে নেন। সংস্কারগত ভাবেই আমরা খেতে ভালবাসি। কিন্তু মা বাবা হিসাবে অনেকেই তাদের শিশুর অত্যধিক ওজন বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাবগুলো নিয়ে চিন্তা করেন না। যখন একটি শিশুর শৈশবকালে বয়স এবং উচ্চতার তুলনায় ওজন অনেক বেশি হয় তখনই শিশুর স্থূলতা দেখা যায়। শৈশবকালীন স্থূলতা যদি পরিণত বয়সেও থেকে যায় তাহলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যেমন ধমনি ও শিরা সংক্রান্ত রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ কোলেস্টেরল।
সুস্থ জীবনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার
কোন খাবার কত পরিমাণে খেলে ওজন ঠিক থাকবে এবং অসুস্থতার সমস্যাও তেমন থাকবে না, এই হিসাবটা মিলানো অনেক কঠিন।তবে স্বাস্থ্য ভাল রাখার প্রথম সর্তই হচ্ছে সুষম খাবার গ্রহণ। এ জন্য প্রতিদিনের খাবারে থাকতে হবে- শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি। এর অর্থ বিভিন্ন ধরনের খাবারের সমন্বয়ে খাদ্য উপাদানের ঠিক অনুপাত ও চাহিদামত ক্যালরির ফলেই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ সম্ভব। স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের উদ্দেশ্য হল প্রতিদিনের খাবারটি যেন আনন্দময় হয়ে উঠে ও দেহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান লাভ করে দেহের বর্ধন, ক্ষয়পূরণ ও কর্ম ক্ষমতাকে বাড়িয়ে সব দিকে ভাল থাকা যায়। খাদ্যাভ্যাসের ত্রুটির জন্যই আমরা বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগে থাকি। এজন্য খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে কয়েকটি পদক্ষেপ নিলে ভাল হয়। যেমন:
ডায়াবেটিস
ইনসুলিনের অভাব/অকার্যকারিতার কারণে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ সার্বক্ষণিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে। অতিরিক্ত প্রস্রাব, অতিরিক্ত পিপাসা, ক্লান্তি, শরীরে দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া, দৃষ্টিহীনতা ডায়াবেটিস এর প্রধান লক্ষণ। প্রাথমিক অবস্থায় এই লক্ষণগুলোর কোনটাই না থাকলেও রোগীর ডায়াবেটিস আছে কি নাই তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সনাক্ত করা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের পরিসংখ্যান মতে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৮.৪ মিলিয়ন ও পৃথিবীতে ২৫ কোটির বেশি ডায়াবেটিস রোগী আছে। এখানে উল্লেখ্য, এর মধ্যে অর্ধেক মানুষ জানেন না যে তার ডায়াবেটিস আছে।
গ্যাস্ট্রোলিভার রোগ
অপুষ্টি আমাদের দেশের একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা। অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ, ভেজাল খাদ্য গ্রহণ, আঁশ বর্জিত খাদ্যাভ্যাস, উত্তেজক খাদ্য গ্রহণ, অপর্যাপ্ত পানি পান ইত্যাদি নানা কারণ ছাড়া মানসিক চাপ, অস্থিরতা, পরিশ্রম না করা ইত্যাদি নানা কারণে এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে।